মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত চ্যানেল অপসারণ করেছে ইউটিউব। ইউটিউব তার নির্দেশিকা লঙ্ঘনের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত পাঁচটি চ্যানেল অপসারণ করে। ইউটিউব কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, তারা আরও কোন কোন চ্যানেল নির্দেশনা লঙ্ঘন করছে তার দিকে নজর রেখেছে।
ইউটিউবের এই সিদ্ধান্তের পরে ফেসবুক তাদের পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী এটি মিয়ানমারের সামরিক-লিঙ্কযুক্ত সমস্ত পেইজগুলি তার সাইট এবং ইনস্টাগ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়েছে। রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নৃশংসতার শিকার সংক্রান্ত অনেকগুলি ঘটনা যা ছবি ও ভিডিও আকারে ধরা পড়েছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে যে নিরাপত্তা বাহিনী লোকজনকে ফাঁকা ফাঁকা গুলি করে এবং তাড়া করে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বর্বরভাবে বিক্ষোভকারীদের মারধর করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই চিত্রগুলিকে ভীতিজনক বলে অভিহিত করে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন যে, “মিয়ানমারে গণতন্ত্রের বিষয়ে সেনাবাহিনীর ষড়যন্ত্র শেষ করার সময় এসেছে,” এবং দেশটির মানবাধিকার বিষয়ক বিশ্ব সংস্থার বিশেষজ্ঞ টম অ্যান্ড্রুজ নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যদেরকে ভিডিওগুলো দেখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শরণার বার্গনার জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকে এক ব্রিফিংয়ে বলেন যে, মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির উপর সহিংসতা বন্ধ করার জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ ও “শক্তিশালী” পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরী।”
তিনি বলেন, “আমাদের অবশ্যই সেনাবাহিনীর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে হবে,” তিনি জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে বলেন, “এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, এই কাউন্সিল নিরাপত্তা বাহিনীকে নোটিশ দেওয়ার জন্য এবং মিয়ানমারের জনগণের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সুদৃঢ় ভূমিকা গ্রহন করতে হবে। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফলকে সমর্থন করতে হবে। ” শ্রেনার বার্গেনার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে “জোর করে দখল করা এই সরকারকে বৈধতা বা স্বীকৃতি প্রদান না করার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখলের পর বিশৃঙ্খলা ব্যতীত আর কিছু হয়নি।”
তিনি নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যদের “মিয়ানমারের জনগণের কন্ঠস্বর” শোনার অনুরোধ করেন। তিনি সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা করার পর সেনা শাসনের অবসান হওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূত কিউ মো তুনকে সমর্থন করার আহ্বান জানান। সামরিক বাহিনী তার ডেপুটি নিয়োগ করেছে, যিনি একদিন পরে পদত্যাগ করেছেন এবং তুন বলেছেন যে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিয়ানমারের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিল তাত্ক্ষণিক কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যে কোনও ধরণের সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হবে, কারণ চীন ও রাশিয়া, নিরাপত্তা কাউন্সিলের দুই স্থায়ী সদস্য যাদের ভেটো দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রবীণ সুইস কূটনীতিক শ্রানার বার্গনার বলেছেন, তিনি মিয়ানমার সফর করবেন এবং সংলাপের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা চালাবেন। শুক্রবার ঘোষণা করা হয়েছে যে, বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়টি অগ্রাহ্য করেছে। দেশটির রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডাকা নিরাপত্তা পরিষদের একটি বিশেষ বৈঠকের আগে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ আরও জোরদার হয়েছে।#