বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব রক্তের হরফে লেখা: শেখ হাসিনা
কলকাতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণ উপলক্ষে শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন যে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বন্ধুত্ব হলো রক্তের হরফে লেখা। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় শনিবার কলকাতায় প্যারেড গ্রাউন্ডে স্মরণ সভার আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তীব্র আশা ব্যক্ত করে বলেন যে, জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ ও ভারত দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের বন্ধুত্বের দৃঢ়তা আরও কঠিন থেকে কঠিনতর হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অবদান চিরস্মরণীয় এবং কখনওই ভোলবার নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সুপ্রিয় প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত যেমনি আমাদের দেশের প্রায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয়-খাদ্য-রসদসহ সব রকম সহযোগিতা করেছে তেমনি আবার হাজার হাজার ভারতীয় সৈন্য এদেশের স্বাধীনতার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সে জন্য আমাদের মধ্যকার বন্ধুত্ব হলো রক্তের হরফে লেখা। কভিড-১৯ জনিত বৈশ্বিক মহামারি মোকাবেলার ক্ষেত্রেও ভারতের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত ভ্যাকসিন উপহার সেই বন্ধুত্বেরই নিদর্শন বহন করে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার বিখ্যাত ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালির ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহায়তায় মহান দিবসটি উপলক্ষে সেই ঐতিহ্যবাহী প্যারেড গ্রাউন্ডে কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসকে সঙ্গে নিয়ে যে স্মরণসভা আয়োজন করেছে, তা একটি মাইলফলক উদ্যোগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরবর্তীতে জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তিনদিনের সফরে কলকাতায় যান এবং ঐতিহাসিক ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের জনসভায় ইন্দিরা গান্ধীর উপস্থিতিতে লাখ লাখ স্বতঃস্ফূর্ত পশ্চিমবঙ্গবাসীর সম্মুখে ভাষণ প্রদান করেন। সেদিন তিনি উত্তাল জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চিরদিন অটুট থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সেদিনের অগ্নিঝরা ভাষণে উপস্থিত জনতা আবেগাপ্লুত হয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য ভারতের জনগণ, সরকার, সশস্ত্রবাহিনী, বিশেষ করে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি বঙ্গবন্ধু গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপণ করেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং আসামের জনগণের প্রতিও বিশেষ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন।
প্রধানমন্ত্রী প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষণের সময়টাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহাপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। সে সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণের একাত্মতা ও আত্মত্যাগকে কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করেন।#