পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য বৃদ্ধি এবং সম্মিলিত চাষাবাদ সূচনা করার প্রস্তাব দিয়েছেন।শাহরিয়ার আলম আফ্রিকান ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে যৌথ কৃষি প্রকল্প সহযোগিতার মাধ্যমে ওআইসির আভ্যন্তরীণ খাদ্য সুরক্ষা এবং স্থিতিস্থাপকতার উপর জোর দেন।
এই জাতীয় প্রকল্পগুলিতে, বাংলাদেশ তার প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং কর্মশক্তি সরবরাহ করতে পারে, ওআইসির সদস্য সমৃদ্ধ রাষ্ট্রগুলি অর্থ সরবরাহ করতে পারে এবং আফ্রিকান দেশগুলিতে আবাদযোগ্য জমি থাকায় তারা তাদের উর্বর জমি সরবরাহ করতে পারে। শাহরিয়ার আলমের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ওআইসির সদস্য দেশগুলির পারস্পরিকভাবে উপকৃত হওয়া সম্ভব।সোমবার জেদ্দায় ওআইসির সচিবালয়ে ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ ইউসুফ বিন আহমান আল-ওথামিনের সাথে দেখা করেন তিনি।
ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ ওথাইমিন প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, তিনি ওআইসির অধীনে এ জাতীয় প্রকল্পগুলির ভালমন্দ দিকগুলো খতিয়ে দেখবেন। ডাঃ ওথামীন স্বাধীনতার ৫০ তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অত্যন্ত প্রশংসা করেন। ডাঃ ওথামীন বলেন, সম্প্রতি এলডিসি তালিকা থেকে মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় স্থান দেওয়া জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক সাফল্যের গল্প এবং নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ঠি অনেক ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রের অনুসরণ করার জন্য উদাহরণ হতে পারে।
উভয়েই রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কটের কালক্ষেপণ নিয়ে আলোচনা করেন এবং কীভাবে ওআইসি এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে তার পদক্ষেপগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা পরিদর্শণ করতে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উচ্চ পর্যায়ের ওআইসির প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান। শাহরিয়ার এই সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ওআইসির সদস্য দেশগুলির কাছ থেকে রাজনৈতিক ও অন্যান্য সমর্থন অব্যাহত রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ওআইসির সেক্রেটারি-জেনারেল ডঃ ওথামীন প্রায় ১.৩ মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বিষয়টি সমাধানে তার জন্য সম্ভবপর সবকিছু করার প্রতিশ্রুতির পুনর্ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার বলেন, ওআইসিকে মুসলিম উম্মাহর সমস্যা সমাধানের জন্য একটি শক্তিশালী ও সক্ষম সংস্থা হিসাবে দেখা উচিত।প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার ওআইসির এলডিসিগুলিতে কোভিড ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য ওআইসির সময়োচিত সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন, যা এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। এর আগে ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল তার কার্যালয়ে আন্তরিকভাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদেরকে স্বাগত জানান।
রাষ্ট্রদূত ডঃ মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারী, মহাপরিচালক এফ এম বোরহান উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত কনস্যুলার জেনারেল এস এম আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন। প্রতিমন্ত্রী শরিয়ার আলম তার তিন দিনের সরকারি সফরে সৌদি আরব রয়েছেন এবং সফর শেষে তিনি সরাসরি বাংলাদেশে ফিরে আসবেন।#