নতুন বছরের শুরুতেই অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশঃ স্বাস্থমন্ত্রী জাহিদ মালেক
ইংল্যান্ডে অনুমোদন পাওয়া অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নতুন বছরের শুরুতেই বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের ভাষ্য অনুযায়ী সবচেয়ে কার্যকরভাবে কোভিড-১৯ ভাইরাস সামাল দেয়া দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারির দিকে থাকায় এ সভার আয়োজন করা হয়।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি যতটা সম্ভব কমিয়ে শীতে করোনার সংক্রমণ মোকাবেলায় বিশ্বের দেশগুলো যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার আলোকেই র্যাংকিং করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। তাদের র্যাংকিং অনুযায়ী সবার উপরে নিউজিল্যান্ড, তারপরে তাইওয়ান, এভাবে পর্যায়ক্রমে অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে এবং সিঙ্গাপুর।
তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২০তম। বাংলাদেশের পরের স্থানেই রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র জার্মানি। তার কয়েক ধাপ পরের অবস্থানে রয়েছে এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তান, তালিকায় তাদের অবস্থান ২৮তম। পাকিস্তানের পরে বৃটেনের অবস্থান। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৩৭তম। তার দুই ধাপ পরে অবস্থান করছে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের।
এর আগে বুধবারই যুক্তরাজ্য ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বলে খবর বের হয়।দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারী অ্যাস্ট্রাজেনেকা কর্তৃক তৈরি টিকা ব্যবহারের জন্য বুধবার দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ) অনুমোদন দিয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ভ্যাকসিন পাওয়ার প্রক্রিয়া মোটামুটি শেষ। আমাদের দেশে টিকা আসার একটা সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছিল জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে। কিন্তু অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুত নিষ্পন্ন হওয়ায় আরও আগে পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ব্রিটেন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন অনুমোদন দেয়ার পর ভারতও এখন অনুমোদন দিয়ে দেবে। খুব সম্ভবত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনুমোদন দিয়ে দেবে।
সেরাম ইন্সটিটিউটের দেয়া আশ্বাস অনুযায়ী আমরা আশা করছি, জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে বা তার আগেও আমরা ভ্যাকসিন পেতে পারি। কারণ এদের অনুমোদন প্রক্রিয়া খুবই দ্রুত হচ্ছে।
জনাব জাহিদ মালেক আরও বলেন, বাংলাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ব্যাপক সফলতার পরিচয় দিয়েছে। এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্র ব্লুমবার্গ বাংলাদেশকে এই মহামারী মোকাবেলায় সফল দেশগুলোর তালিকায় ২০তম স্থানে রেখেছে ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। তারা দেশের জন্য অনেক বড় ত্যাগ স্বীকার করেছে। করোনার কারণে সারা দেশ যখন লকডাউনে চলে গেছে, সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যখন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, এমতাবস্থায় কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো লকডাউন ছিল না, কারও কোনো ছুটিও ছিল না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।#