ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে মৃত্যুতে বাংলাদেশের শোক প্রকাশ
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে মৃত্যুতে বাংলাদেশের শোক প্রকাশ -পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ একে আবদুল মোমেন ইন্দোনেশিয়ায় ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পে বহু প্রাণহানী ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার মধ্যরাতের ঠিক পরে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প দেশটির সুলাওসি দ্বীপকে কাঁপিয়ে দেয়। বাড়িঘর এবং ভবনগুলি ভেঙে পড়েছে, ভূমিধসের ঘটনা ঘটে এবং কমপক্ষে ৩৪ জন নিহত হয়।প্রবল ভূমিকম্পের সময় ৬০০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়, যাতে লোকজন অন্ধকারে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছোটে।এছাড়াও, ভেঙে পড়া ঘরবাড়ি এবং ভবনগুলির ধ্বংসাবশেষে বহু লোকজন আটকা পড়ে বলে খবর পাওয়া গেছে। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষকে অস্থায়ী আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশী পররাষ্ট্র মন্ত্রী তার ইন্দোনেশিয়ান সমকক্ষ রেটনো এলপি মার্সুডিকে এক বার্তায় ইন্দোনেশিয়ান সরকার, দেশের মানুষ এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা করেন যে, ইন্দোনেশিয়ার স্বচ্ছ ও উদ্যোগী মানুষরা বিপর্যয় কাটিয়ে উঠবে এবং অতিশীঘ্রই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে যে, মামুজুতে উদ্ধারকারীরা ভেঙে পড়া ঘরবাড়ি ও ভবনগুলির ধ্বংসাবশেষে আটকা পড়ে থাকা ২৬ মরদেহ উদ্ধার করায় মৃতের সংখ্যা এপর্যন্ত ৩৪ জনে পৌঁছেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, জেলায় কমপক্ষে ৩০০ টি বাড়ি ও একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং প্রায় ১৫,০০০ লোককে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। অনেক এলাকায়ই তখন বিদ্যুত ও টেলিফোন সেবা বন্ধ ছিল। এছাড়াও, ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া, জলবায়ু এবং ভূ-প্রকৌশল সংস্থা আফটারশোকের ঝুঁকি এবং সুনামির সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করেছে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আগ্নেয়গিরির ত্রুটিযুক্ত রেখা এবং “দ্য রিং অফ ফায়ারের” অবস্থানের কারণে ২৬০ মিলিয়ন মানুষের ইন্দোনেশিয়াতে প্রায়শই ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ এবং সুনামিতে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। ২০১৮ সালে, সুলাওসি দ্বীপে পালুতে ৭.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প সুনামির সূত্রপাত করেছিল এবং মাটি লিকুইফ্যাকশন নামে একটা ভুমি ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছিল। এই ঘটনায় ৪০০০ এরও বেশি লোক মারা যায় এবং পুরো আশেপাশের অংশ বিলীন হয়ে যায়। ২০০৪ সালে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে সৃষ্ট সুনামি যা প্রায় এক ডজন দেশে অনুভূত হয়। এই ঘটনায় ঐ এক ডজন দেশে ২৩০০০০ মানুষ মারা গিয়েছিল যার বেশিরভাগই ছিল ইন্দোনেশিয়ার।
ডাঃ মোমেন বলেন, “বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তা ও উদ্ধারকর্মীরা উভয় দেশই দুর্যোগপ্রবণ হওয়ায় যৌথ ভূমিকম্পের ড্রিল এবং সিমুলেশন অনুশীলনে অংশ নিতে পারে।” তিনি দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেন।#