আমদানির নামে বিদেশে পাচার ১৪শ কোটি টাকা!
ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ওপর পরিচালিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) আলাদা দুটি তদন্ত প্রতিবেদন থেকে তথ্য পাওয়া গেছে যে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে পিকে হালদার প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
দেশের আটটি ব্যাংকে তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে জমা ১১০০ কোটি টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। জব্দ করা হয়েছে হিসাবগুলো। বাকি ১৪০০ কোটি টাকা বিভিন্ন হিসাব ঘুরার পর এক পর্যায়ে নগদ তুলে নেওয়া হয়েছে। অথবা পণ্য আমদানির নামে স্থানান্তর করা হয়েছে বিদেশে। কিন্তু পণ্য দেশে আসেনি। এভাবেই অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০১৪ সাল থেকে নামে-বেনামে কোম্পানি গঠন করে পিকে হালদার ও তাদের সহযোগী একটি চক্র চারটি প্রতিষ্ঠানের নামে শেয়ার কিনে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেন। প্রথম দিকে তার নিজ নামে এই লিজিংয়ের কিছু শেয়ার থাকলেও পরে তা হস্তান্তর করেন। বেনামে আরও কিছু ভুয়া প্রতিষ্ঠান তৈরি করে এ থেকে ঋণ বাবদ ২৫০০ কোটি টাকা বের করে নেন। এ অর্থের মধ্যে ১৪০০ কোটি টাকা একাধিক হিসাবে স্থানান্তর করেছেন।
পিকে হালদার ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয় প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে তিনটির হিসাবে ১২০০ কোটি টাকা, পিকে হালদারের হিসাবে ২৪০ কোটি এবং তার মা লীলাবতী হালদারের নামে জমা হয় ১৬০ কোটি টাকা। হিসাবগুলোতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের বাইরে থেকে এসেছে ২০০ কোটি টাকা। বর্তমানে জমা আছে মাত্র সাড়ে ৮ কোটি টাকা। বাকি অর্থ দেশের কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নেই। এমনকি কোনো ব্যক্তির কাছে আছে এমন রেকর্ডও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সন্দেহ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, টাকা নগদ আকারে তুলে নেওয়ার কারণে সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু অর্থের খোঁজ মিলেছে। সেগুলো এক হিসাব থেকে নগদ তুলে জমা করা হয়েছে অন্য হিসাবে। পরে আবার তুলে নেওয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তির যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি খোলা হয়েছে, কিন্তু সেগুলোর পণ্য দেশে আসেনি।#